1. dainikjonopath@gmail.com : admin :
  2. utexwptf@znemail.com : elden67869774 :
  3. aahsanmanik@gmail.com : M A Manik :
  4. riazuddin137990@gmail.com : Riaz Uddin :
  5. msmtktgi@mailkv.com : sommersalter4 :
ঢাকা ০১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৮১ মৌজায় রেজিস্ট্রেশন ধস, ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতা-সরকার উভয়ই

কক্সবাজারে জমি ক্রয়ে আকাশছোঁয়া উৎসকর:

সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এস এম জাফর : কক্সবাজার জেলার ৮১টি মৌজায় জমি ক্রয়ে উৎসকরের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ক্রেতাদের চরম বিপাকে ফেলেছে।

রেজিস্ট্রেশন ফি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় জমি ক্রেতারা দলিল নিবন্ধনে অনীহা প্রকাশ করছেন। এর ফলে সরকারও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।

জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ২৪ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা কার্যকর হয় ১ জুলাই থেকে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নাল জমির ক্ষেত্রে প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা, আবাসিক জমির জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং বাণিজ্যিক জমির জন্য ১ লাখ টাকা করে উৎসকর নির্ধারণ করা হয়েছে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) দেওয়া তালিকা অনুযায়ী জেলার ১৮৭টি মৌজার মধ্যে ৮১টি এই নীতিমালার আওতায় এসেছে।

ভূমি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উৎসকর মূলত সিটি করপোরেশন এলাকায় জমির উচ্চমূল্য বিবেচনায় প্রযোজ্য। কিন্তু কক্সবাজারে একই হার প্রযোজ্য করায় মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকার ক্রেতারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে সাফ কবলা দলিল নিবন্ধন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। জমি বিক্রয় হলেও তা মূলত বায়নানামা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা দানপত্রের মাধ্যমে হচ্ছে—যা সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে কোনো অবদান রাখে না।

ঈদগাঁওর ইকবাল হোসেন বলেন, “৫ শতক ধানি জমি কিনেছি ১ লক্ষ টাকায়, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন খরচই দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। জমির চেয়ে নিবন্ধন খরচ বেশি—এ কেমন নীতি?”

মহেশখালীর জয়নাল আবেদিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “৫ শতক জমি কিনেছি শ্রমের টাকায়, কিন্তু দেড় লাখ টাকা উৎসকর দেওয়ার ক্ষমতা নেই। এখন জমিও নেই, টাকা ফেরতও পাচ্ছি না।”

রামুর পূর্ণধন বড়ুয়া বলেন, “আগে ১৮ হাজার টাকায় উৎসকর হতো, এখন দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। জমি কেনার পর এই বাড়তি চাপ সামলানো অসম্ভব।”

কক্সবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দীন মিজান জানান, “অতিরিক্ত উৎসকর ফি জনবান্ধব নয়।

আরও পড়ুন>> আজ থেকে ফের বন্ধ হচ্ছে সদর হাসপাতালের আইসিইউ সেবা

অনেক ক্রেতা দলিল নিবন্ধন না করে ফিরছেন, ফলে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে। আমরা বারবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কোনো সমাধান হয়নি।”

জেলা রেজিস্ট্রার রেজাউল করিম বকসী স্বীকার করেন, “নীতিমালাটি রাজস্ব বাড়ানোর জন্য হলেও উল্টো রাজস্ব কমে গেছে।

যেহেতু এই এলাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় নয়, তাই উৎসকর পুনর্বিবেচনার জন্য আমরা উর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছি।”

৮১ মৌজায় হঠাৎ করে আকাশছোঁয়া উৎসকর আরোপের ফলে জমি ক্রেতা ও সরকারের জন্যই পরিস্থিতি অচলাবস্থায় পৌঁছেছে। জমি রেজিস্ট্রেশনে ধস নামার পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে।

সংশ্লিষ্ট মহল দ্রুত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করলে ভূমি বাজার ও রাজস্ব খাত উভয়ই দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :
  • আপডেট সময় : ১০:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫ ৪৪১ বার পড়া হয়েছে

    • আপনি কি banglarjonopath.com এর নিয়মিত পাঠক?

      View Results

      Loading ... Loading ...
  • পুরনো ফলাফল
    Logo
    রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    ফজর শুরু৪:০৭
    জোহর শুরু১২:০৫
    আসর শুরু৪:৪২
    মাগরিব শুরু৬:৪০
    ইশা শুরু৮:০৩
    সূর্যোদয় :৫:২৯সূর্যাস্ত :৬:৩৫

    ৮১ মৌজায় রেজিস্ট্রেশন ধস, ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতা-সরকার উভয়ই

    কক্সবাজারে জমি ক্রয়ে আকাশছোঁয়া উৎসকর:

    আপডেট সময় : ১০:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

    এস এম জাফর : কক্সবাজার জেলার ৮১টি মৌজায় জমি ক্রয়ে উৎসকরের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ক্রেতাদের চরম বিপাকে ফেলেছে।

    রেজিস্ট্রেশন ফি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় জমি ক্রেতারা দলিল নিবন্ধনে অনীহা প্রকাশ করছেন। এর ফলে সরকারও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।

    জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ২৪ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা কার্যকর হয় ১ জুলাই থেকে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নাল জমির ক্ষেত্রে প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা, আবাসিক জমির জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং বাণিজ্যিক জমির জন্য ১ লাখ টাকা করে উৎসকর নির্ধারণ করা হয়েছে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) দেওয়া তালিকা অনুযায়ী জেলার ১৮৭টি মৌজার মধ্যে ৮১টি এই নীতিমালার আওতায় এসেছে।

    ভূমি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উৎসকর মূলত সিটি করপোরেশন এলাকায় জমির উচ্চমূল্য বিবেচনায় প্রযোজ্য। কিন্তু কক্সবাজারে একই হার প্রযোজ্য করায় মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকার ক্রেতারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

    সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে সাফ কবলা দলিল নিবন্ধন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। জমি বিক্রয় হলেও তা মূলত বায়নানামা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা দানপত্রের মাধ্যমে হচ্ছে—যা সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে কোনো অবদান রাখে না।

    ঈদগাঁওর ইকবাল হোসেন বলেন, “৫ শতক ধানি জমি কিনেছি ১ লক্ষ টাকায়, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন খরচই দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। জমির চেয়ে নিবন্ধন খরচ বেশি—এ কেমন নীতি?”

    মহেশখালীর জয়নাল আবেদিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “৫ শতক জমি কিনেছি শ্রমের টাকায়, কিন্তু দেড় লাখ টাকা উৎসকর দেওয়ার ক্ষমতা নেই। এখন জমিও নেই, টাকা ফেরতও পাচ্ছি না।”

    রামুর পূর্ণধন বড়ুয়া বলেন, “আগে ১৮ হাজার টাকায় উৎসকর হতো, এখন দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। জমি কেনার পর এই বাড়তি চাপ সামলানো অসম্ভব।”

    কক্সবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দীন মিজান জানান, “অতিরিক্ত উৎসকর ফি জনবান্ধব নয়।

    আরও পড়ুন>> আজ থেকে ফের বন্ধ হচ্ছে সদর হাসপাতালের আইসিইউ সেবা

    অনেক ক্রেতা দলিল নিবন্ধন না করে ফিরছেন, ফলে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে। আমরা বারবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কোনো সমাধান হয়নি।”

    জেলা রেজিস্ট্রার রেজাউল করিম বকসী স্বীকার করেন, “নীতিমালাটি রাজস্ব বাড়ানোর জন্য হলেও উল্টো রাজস্ব কমে গেছে।

    যেহেতু এই এলাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় নয়, তাই উৎসকর পুনর্বিবেচনার জন্য আমরা উর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছি।”

    ৮১ মৌজায় হঠাৎ করে আকাশছোঁয়া উৎসকর আরোপের ফলে জমি ক্রেতা ও সরকারের জন্যই পরিস্থিতি অচলাবস্থায় পৌঁছেছে। জমি রেজিস্ট্রেশনে ধস নামার পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে।

    সংশ্লিষ্ট মহল দ্রুত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করলে ভূমি বাজার ও রাজস্ব খাত উভয়ই দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।